মব জাস্টিস

গণঅভ্যুত্থান–পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার মানুষের প্রত্যাশা পূরণে হতাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটি বলেছে, এখনো নির্বিচার গ্রেপ্তার চলছে, হেফাজতে মৃত্যু ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে, যা আগের সরকারের দমনমূলক আচরণের পুনরাবৃত্তির মতোই মনে হচ্ছে।

জুলাই মাসে মব সৃষ্টি করে (উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ আক্রমণ) বা গণপিটুনি দিয়ে ১৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অজ্ঞাতনামা ৫১টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছে ৯ জন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, কোনো ধরনের মবকেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। মব সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার অবমাননার সঙ্গে বিএনপির কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে ডিসিপ্লেনারি অ্যাকশন নেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘মব জাস্টিস কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁর সঙ্গে [সাবেক সিইসি নূরুল হুদা] যেটা হয়েছে, মানে গলায় এটা–সেটা পরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

‘মব’ সৃষ্টি করে উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী সবাইকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ‘মব’ তৈরি করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে বাসা থেকে ধরে এনে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার পর এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের ৭ মাসে গণপিটুনির অন্তত ১১৪টি ঘটনা ঘটেছে। এতে ১১৯ জন নিহত এবং ৭৪ জন আহত হয়েছে। আর গত ১০ বছরে গণপিটুনিতে মারা গেছে কমপক্ষে ৭৯২ জন। আহত হয়েছে ৭৬৫ জন।